Pages

Wednesday, September 16, 2015

Constitution: Chapter 1 The Republic

১৯৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীন হলে, দেশ পরিচালনার জন্য একটি নতুন সংবিধানের প্রয়োজন পরে। সংবিশান হলো রাষ্ট্রে মূল ও সর্বোচ্চ আইন; রাষ্ট্রের মৌলিক আইনের দলিল।স্বাধীনতার পর ১১ জানুয়ারি, ১৯৭২ সালে রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমান অস্থায়ী সংবিধানের আদেশ জারি করেন। সেই ধারা অনুযায়ী  রাষ্ট্রপতি আবু সাঈদ চৌধুরি ২৩ মার্চ ১৯৭২ সালে গণপরিষদ আদেশ জারি করেন। এই আদেশ অনুযায়ী ১৯৭০ সালের নির্বাচিত জাতীয় পরিষদ ও প্রাদেশিক পরিষদের সদস্যদের নিয়ে গণপরিষদ গঠিত হয়। সদস্য সংখ্যা ছিল ৪০৩ জন; এবং সদস্যপদ হারিয়েছিলেন ৬৬ জন।

এই গণপরিষদের দ্বিতীয় অধিবেশনে (১১ এপ্রিল ১৯৭২) ড. কামাল হোসেনকে সভাপতি করে সংবিধান প্রণয়নের জন্য ৩৪ সদস্যের একটি কমেটি গঠন করা হয়। একই বছর ১৭ এপ্রিল থেকে  ৮মে পর্যন্ত এই কমেটি বিভিন্ন পর্যায়ে বৈঠক করে এবং জনগণের মতামত সংগ্রহের জন্য মতামত আহব্বান কারা হয়। সংগ্রহীত মতামত থেকে ৯৮ টী সুপারিশ গ্রহন করা হয়।  ১০ জন ১৯৭২ সংবিধান প্রণয়ন কমেটি খসড়া সংবিধান অনুমোদন করে। ১২ অক্টোবর তৎকালীন আইন মন্ত্রী ড. কামার হোহেন সংবিধান বিল গণপরিষদে উথাপন করেন।  ৪ নভেম্বর ১৯৭২ খসড়া সংবিধানটি গণপরিষদে গৃহীত হয়। এবং এই দিনটিকেই সংবিধান দিবস হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। হস্তলিখিত খসড়া সংবিধান্নে সাক্ষর প্রদান করা হয় ১৪ ও ১৫ ডিসেম্বর। ১৬ ডিসেম্বর ১৯৭২ থেকে প্রথম সংবিধান কার্যকর হয় এবং গণপরিষদ ভেঙ্গে দেওয়া হয়।


উল্লেখযোগ্য বিষয়াবলীঃ

1.       সংবিধান প্রণয়ন কমেটিতে একমাত্র নারী সদস্য ছিলেন- রাজিয়া বনু
2.       হস্ত লিখিত সংবিধানের সাক্ষর করেননি একমাত্র ন্যাপ বা বিরোধীদলীয় সদস্য- সুরঞ্জিত সেন গুপ্ত।
3.       খসড়া সনবিধানের হস্ত লিখক- আব্দুর রঊফ।
4.       খসড়া সংবিধানের অলঙ্করণ ও ডিজাইনার- জয়নুল আবেদীন।
5.       বাংলাদেশ সংবিধানের রুপকার বলা হয়- ড. কামাল হোসেন কে।
6.       সংবিধানের ব্যাখ্যাকারক- সুপ্রিম কোর্ট।
7.       সংবিধানের প্রকৃতি- লিখিত ও দুস্পরিবর্তনীয়।
8.       হস্তলিখিত সংবিধানের পৃষ্ঠা ছিল- ৯৩টি, সাক্ষর সহ মোট ১০৮ টি। প্রথম সাক্ষর করেন শেখ মুজিবুর রহমান।
9.       গণপরিষদ গঠন হয়েছিল- কুষ্টিয়া জেলার মুজিবনগরে।
10.   অস্থায়ী মুজিবনগর সরকার শপথ গঠন করেছিল- ১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল।
11.   বাংলাদেশ স্বাধীন হোয়ার পুর্বে দুইটি অন্তরবর্তীকালীন সংবিধান প্রণীত হয়
ক- স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র (১০ এপ্রিল ১৯৭১)
খ- অস্থায়ী সংবিধান আদেশ (১১ জানুয়ারি ১৯৭২)
12.   হস্তলিখিত সংবিধানের সাক্ষর করেন গণপরিষদের- ৩০৯ জন সদস্য। আর মোট সাক্ষর পরেছিল ৩৮৬ জনের।
13.   স্বাধীনতার ঘোষনার আওতাবলে রাষ্ট্রপতি ১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিল “আইনের ধারাবাহিকতা বলবৎকরণ আদেশ” ঘোষণা করেন। এই আদেশ টি ২৬ মার্চ ১৯৭১ থেকে কার্যকর হয়।
14.   গণপরিষদের কোরাম গঠনের জন্য ১০০ জন সদস্যের উপস্থিতি দরকার হত।

একনজরে সংবিধান পরিচিতিঃ

o   প্রস্তাবনা- ১টি।
o   সংবিধানে ব্যাবহৃত ভাষা ২টি বাংলা ও ইংরেজি।
o   মূলনীতি- ৪টি।
o   ভাগ বা অধ্যায়- ১১টি।
o   অনুচ্ছেদ- ১৫৩টি।
o   তফসিল- ৭টি
o   সংশোধনী- ১৬টি।

Chapter 1 The Republic:

Article 1- প্রজাতন্ত্র
বাংলাদেশ একটি একক, স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র যার নাম “The People’s Republic of Bangladesh.


Article 2- প্রজাতন্ত্রের সীমানা
১৯৭১ সালের মার্চ মাসে স্বাধীনতা ঘোষণার পূর্বে যে সকল এলাকা নিয়ে পুর্ব পাকিস্তান গথিত ছিল, সেই সব এলাকা প্রজাতন্ত্রের সীমানা বলে গণ্য হবে।
২- যে সকল এলাকা পরবর্তীকালে বাংলাদেশের সীমানা ভুক্ত হবে।

Article 2A- রষ্ট্রধর্ম
এই অনুচ্ছেদটি পঞ্চাদশ সংশোধন আইন, ২০১১ (অর্থাৎ ১৫তম সংশোধনী, ২০১১) সালে সংবিধানে যুক্ত করা হয়। প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রধর্ম হবে ইসলাম। তবে অন্য ধর্ম পালনে রাষ্ট্র সমমর্যাদা ও সমধিকার নিশ্চিত করবে।

Article 3-  রাষ্ট্রভাষা বাংলা
Article 4- প্রতীক, পতাকা, সংগীত
সংগীতঃ আমার সোনার বাংলার প্রথম দশ চরন।
পতাকাঃ সবুজ ক্ষেত্রের ভিতর রক্তবর্নের একটি ভরাট বৃত্ত।
প্রতীকঃ দুইপাশে ধানেরশীষ বেষ্টিত মাঝখানে একটি ভাসমান শপলা, এবং উপরে তিনটি পাট গাছের পাতা যা দুইপাশে দুটি করে তারাদ্বারা বেষ্টিত।

Article 4A- বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি
** অনুচ্ছেদ ৪ক সংবিধানের ১৫তম সংশোধনীতে সংযোজন করা হয়, ২০১১ সালে।

Article 5- বাংলাদেশের রাজধানী হবে ঢাকা, এবং এর আয়তন আইনের দ্বারা নিদ্ধারিত হবে।
রাজধানীর আয়তন নিয়ে যাতে বিভ্রান্তি সৃষ্টি না হয়, সেজন্য সংবিধানেই এ ব্যাপারে স্পষ্ট উল্লেখ করা আছে। সংবিধানের ৫ অনুচ্ছেদে বলা আছে, ‘প্রজাতন্ত্রের রাজধানী ঢাকা। রাজধানীর সীমানা আইনের দ্বারা নির্ধারিত হইবে।তবে স্বাধীনতার ৪৩ বছরে কোনো আইন হয়নি। ফলে নির্ধারণ করা যায়নি রাজধানীর সীমানাও।
ইতিহাস ঘেঁটে দেখা গেছে, প্রতিবার আদমশুমারিতে রাজধানী ঢাকার আয়তন বেড়েছে। স্বাধীনতার আগে ১৯৫১ সালে পূর্ব বাংলার রাজধানী ঢাকার আয়তন ছিল খুবই ছোট, মাত্র ২৮ বর্গমাইল (৭২ দশমিক ৫২ বর্গকিলোমিটার)। ১৯৬১ সালে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৯০ দশমিক ৬৫ বর্গকিলোমিটারে। আর স্বাধীনতার পর ১৯৭৪ সালে ঢাকার সীমানা দাঁড়ায় ১০৩ দশমিক ৬ বর্গকিলোমিটার। ১৯৮১ সালে ঢাকার আয়তনে বড় ধরনের পরিবর্তন আসে। স্ট্যাটিসটিক্যাল মেট্রোপলিটন এলাকা হিসেবে ঢাকার আয়তন দাঁড়ায় ১ হাজার ১২০ দশমিক ৮ বর্গকিলোমিটার। ২০১১ সালের বিবিএসের সর্বশেষ আদমশুমারি হিসাবে ঢাকার আয়তন আরো বেড়ে দাঁড়ায় ১ হাজার ৪৬০ বর্গকিলোমিটারে। রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) অধিভুক্ত ঢাকার আয়তন আবার ১ হাজার ৬৮৩ দশমিক ৫ বর্গকিলোমিটার।

Article 6- নাগরিকত্ব
বাংলাদেশের নাগরিকত্ব আইনের দ্বারা নিদ্ধারিত হবে। বাংলাদেশের জনগন জাতি হিসেবে বাঙ্গালী এবং নাগরিক হিসেবে বাংলাদেশী।
* নাগরিকত্ব (সংশোধন) আইন ২০০৯
এ ভূখণ্ডে বসবাসরত নাগরিকদের পরিচিতি ৭২-এর সংবিধানে বাঙ্গালী মর্মে উল্লেখ ছিল। অতঃপর দ্বিতীয় ঘোষণাপত্র (পঞ্চদশ সংশোধন) আদেশ, ১৯৭৮-এর মাধ্যমে সংবিধানে সংশোধনী এনে বলা হয়, বাংলাদেশের নাগরিকগণ বাংলাদেশী বলে পরিচিত হবেন। সর্বশেষ সংবিধান পঞ্চদশ সংশোধন আদেশ দ্বারা বলা হয়, বাংলাদেশের জনগণ জাতি হিসেবে বাঙালি এবং নাগরিকগণ বাংলাদেশী বলে পরিচিত।

Article 7- সংবিধানের প্রাধান্য
***প্রজাতন্ত্রের সকল ক্ষমতার মালিক জনগণ। [অনুচ্ছেদ- ৭(১)]
***সংবিধান প্রজাতন্ত্রের সর্বচ্চো আইন। [অনুচ্ছদে- ৭(২)]

Article 7A- সংবিধান বাতিল ও স্থগিত করণ অপরাধ
অসাংবাধানিক উপায়ে সংবিধান বা তার কোন অনুচ্ছেদ বাতিল বা স্থগিত করণ রাষ্ট্রদ্রোহিতার অপরাধ। ৭(৩) অনুচ্ছেদের অধীনে দোষী ব্যাক্তি প্রচিলিত আইনে নির্ধারিত শাস্তির মধ্যে সর্বোচ্চ শাস্তি পেতে পারে।

Article 7B- সংবিধানের মৌলিক বিধান সংশোধন অযোগ্য
পরিবর্তন, পতিস্থাপন, রহিতকরণ ও সংশোধন অযোগ্য-
১- প্রস্তাবনা।
২- প্রথমভাগের সকল অনুচ্ছেদ।
৩- দ্বিতীয় ভাগের সকল অনুচ্ছেদ।
৪- নবম এর ‘ক’ ভাগে বর্নিত অনুচ্ছেদ সমূহের (১৪১ক, ১৪১খ) বিধানবলী সাপেক্ষে তৃতীয় ভাগের সকল অনুচ্ছেদ (১৪১খ- ৩৬, ৩৭, ৩৮, ৩৯, ৪০, ৪২)।
৫- একাদশ ভাগের ১৫০ অনুচ্ছেদ সহ অন্যান্য মৌলিক কাঠামো সংক্রান্ত অনুচ্ছেদসমূহ।
** 7A and 7B সংবিধানের ১৫তম সংশোধনীতে সংযোজন করা হয়, ২০১১ সালে।

MCQ

1.       সংবিধানের বাখ্যাকারক কে ?
-   সুপ্রিম কোর্ট
-   হাই কোর্ট ডিভিশন
-   আপীল ডিভিশন
2.       স্বাধীন বাংলাদেশের সংবিধান কার্যকর হয় কবে?
-   ৪ নভেম্বর ১৯৭২
-   ১২ অক্টোবর ১৯৭২
-   ১৬ ডিসেম্বর ১৯৭২

3.       ১০ এপ্রিল ১৯৭১ কোথায় অস্থায়ী গণপরিষদ ও অস্থায়ী সরকার গঠন করা হয়?
-   কুষ্টিয়া জেলায়
-   ঢাকা জেলায়
-   টাঙ্গাইল জেলায়

4.       স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রে বাংলাদেশ কে কি হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছিল ?
-   গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ
-   স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র
-   সার্বভৌম প্রজাতন্ত্র

5.       অস্থায়ী সংবিধান আদেশ বহাল ছিল ?
-   ৪ নভেম্বর ১৯৭২
-   ১২ অক্টোবর ১৯৭২
-   ১৬ ডিসেম্বর ১৯৭২

6.       ১৯৯৭২ সালের ৪ নভেম্বর স্বাধীন বাংলাদেশের খসড়া সংবিধান গৃহীত হয়-
-   গণপরিষদে।
-   জাতীয় পরিষদে
-   জাতীয় পার্লামেন্টে

7.       বাংলাদেশ সংবিধানের কোন অনুচ্ছেদে প্রশাসনের সকল পর্যায়ের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের মাধ্যমে জনগণের কার্যকর অংশগ্রহণ করার বিধান আছে ?
-   ১১
-   ১২
-   ১৩

8.        হস্তলিখিত মূল সনবিধানে সাক্ষর করেননি গণপরিষদের কত জন সদস্য?
-   ৯৪ জন
-   ১ জন
-   ৬৬ জন




9.       খসড়া সংবিধানটি গণপরিষদের কোন অধিবেশনে উথাপিত হয়?
-   প্রথম
-   দ্বিতীয়
-   তৃতীয়

10.   জাতীয় জীবনে সর্বস্তরে মহিলাদের অংশগ্রহণ নিশ্চিতকরণের কথা বলা হয়ছে কোন অনুচ্ছেদে?
-   ১০
-  
-   ১১

11.   “প্রজাতন্ত্রের সকল ক্ষমতার মালিক জনগণ”- এই ঘোষণাটি করা হয়েছে সঙ্গবিধানের কোন অনুচ্ছেদে ?
-  
-  
-  

12.   গ্রামীণ উন্নয়ন ও কৃষি বিপ্লব সম্পর্কে বলা হয়েছে কোন অনুচ্ছেদে ?
-   ১৫
-   ১৬
-   ১৭