Pages

Sunday, November 29, 2015

Penal Code: Chapter-III Provisions of Punishments.

ধারা ৫৩- Punishment:
দণ্ডবিধিতে নিম্নাক্তো ৫ ধরনের শাশ্তির কথা উল্লেখ্য আছেঃ
১- মৃত্যু
২- যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
৩- কারাদণ্ড
কারাদণ্ড আবার দুইপ্রকার সশ্রম ও বিনাশ্রম।
৪- সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করণ (Forfeiture of Property)
৫- অর্থদন্ড বা Fine

দন্ডবিধিতে মাত্র ছয়টি অপরাধের জন্য মৃত্যু দন্ডের বিধান বর্তমান।
১- রাষ্ট্রদ্রীহিতা। ধারা ১২১ এবং ১৩২
২- মৃত্যুদন্ডে দণ্ডিত করার উদ্দেশ্য মিথ্যা সাক্ষ্য প্রদান। ধারা ১৯৪
তবে শর্ত থাকে যে মিথ্যা সাক্ষ প্রদানকারীকে  শুধু তখনই মৃত্যুদন্ডে দণ্ডিত করা যাবে, যখন অভিযুক্ত ব্যাক্তির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়।
৩- নরহত্যা। ধারা ৩০২ এবং ৩০৩
৪- নাবালক কিংবা পাগল ব্যাক্তির আত্মহত্যায় প্ররোচনা বা সয়াহতা। ধারা ৩০৫
৫- যাবজ্জীবন কারদন্ডে দণ্ডিত ব্যাক্তি যদি কারাবাস কালীন সময়ে নরহত্যা করে। ধারা ৩০৭
৬- ডাকাতির সাথে নরহত্যা। ধারা ৩৯৬
৭- দশ বৎসরের কম বয়সের কোন ব্যাক্তিকে অপহরণ বা অপবাহন করা। ধারা ৩৬৪-ক
কোন ব্যাক্তিকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হইলে দণ্ডে, মৃত্যু না হওয়া পর্যন্ত গলায় ফাঁসি দিয়ে ঝুলাইয়া রাখার নির্দেশ দেওয়া থাকবে। ফৌজদারি কার্যবিধি ধারাঃ ৩৬৮(১)
দায়রা জজ আসামীকে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করলে, কতদিনের মধ্যে আপীল করতে হবে তা আসামীকে জানাইয়া দিবেন। ফৌজদারি কার্যবিধি ধারাঃ ৩৭১(৩)
দায়রা আদালত মৃত্যুদন্ডের আদেশ দিলে, হাইকোর্টের আওনুমোদন না পাওয়া পর্যন্ত সেই আদেশ কার্যকর করা যাবে না। ফৌজদারি কার্যবিধি ধারাঃ ৩৭৪
৩৭৪ ধারার অধীনে হাইকোর্ট বিভাগের কাছে অনুমোদন চাওয়া হলে। হাইকোর্ট বিভাগ-
১- মৃত্যুদন্ডদের আদেশে বহাল থাকতে পারে বা আইন সমর্থিত অপর কোন দণ্ড দিতে পারে।
২- মৃত্যুদণ্ডের আদেশ বাতিল করতে পারে বা এমন কোন দণ্ডে দণ্ডিত করতে পারে, যে সব দণ্ড দায়রা আদালত সেই অপরাধের জন্য আরোপ করতে পারে।
৩- আসামীকে খালাস দিতে পারে।
তবে শর্ত থাকে যে, আপীলের জন্য নির্দিষ্ট সময় অতিবাহিত না হওয়া পর্যন্ত মৃত্যুদণ্ড অনুমোদনের আদেশ দেওয়া যাবে না। ফৌজদারি কার্যবিধি ধারাঃ ৩৭৬
মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত স্রী লোককে গর্ভবতী পাওয়া গেলে হাইকোর্ট বিভাগ দণ্ড স্থগিত রাখিবার আদেশ দিতে পারে, অথবা দণ্ড কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাবাস দিতে পারেন। ফৌজদারি কার্যবিধি ধারাঃ ৩৮২
দণ্ডবিধিতে ৫৫ ধরনের  অপরাধের জন্য যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের বিধান রয়েছে।
দণ্ডবিধিতে ১৯ ধরনের অপরাধের জন্য বিনাশ্রম কারাদন্ডের বিধান রাখা হয়েছে।
দণ্ডবিধিতে ১১ ধরনের অপরাধের জন্য শুধু মাত্র জরমানার বিধান রাখা হয়েছে।
জরিমানার  ক্ষেত্রে আসামীর আর্থিক অবস্থা, অপরাধের ধরন ও অবস্থার প্রতি লক্ষ রাখতে হবে, যে ক্ষেত্রে পর্যাপ্ত পরিমাণ শাস্তি দেওয়া হয়েছে সেই ক্ষেত্রে অত্যাধিক পরিমাণ জরিমান আরোপ করা উচিত না। [1952 SCR 172]
যেক্ষত্রে মারাত্মক প্রকৃতির অপরাধ সংগঠিত হয়ছে সে ক্ষেত্রে অর্থদণ্ডের চেয়ে কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া বাঞ্ছনীয়। [AIR 1930 ALL 279 (DB)]
জরিমানা পরিশোধের ব্যার্থিতায় যে কারাদণ্ড দেওয়া হয় তাহা একটূ বেশি হওয়া উচিত, যাতে আসামী কারাভোগ না করে জরিমানা দিতে রাজী হয়। [AIR 1950 Kutch, 73]
জরিমানা পরিশোধের ব্যার্থতায় যে কারাভোগের আদেশ দেওয়া হয়, তা আসামীকে জরিমানা পরিশোধের দায় থেকে মুক্তি দেয় না। [AIR 1953 Trav. Co, 233]


ধারা ৫৩ক Construction to Transportation:
এই ধারাটি ১৯৮৫ সালের ৪১ নং অধ্যাদেশ দ্বারা দন্ডবিধিতে সংযুক্ত করা হয়েছে। বর্তমান প্রচলিত আইনের কোথাও যদি শাস্তি হিসেবে দ্বীপান্তর এর কথা উল্লেখ্য থাকে-
১- সেটা যদি যাবজ্জীবন দ্বীপান্তর বুঝায়, তাহলে সেটাকে যাবজ্জীবন কারাবাস ধরতে হবে।
২- কিন্তু সেটা যদি অন্য কোন স্বল্প মেয়াদের দ্বীপান্তর বুঝায় তাহলে তা রদ বলে গণ্য হবে।
ধারা ৫৪ মৃত্যুদণ্ড হ্রাসকরণ (commutation of sentence of death):
মৃত্যুদণ্ড দেওয়া যেতে পারে এইরুপ প্রত্যক ক্ষেত্রে সরকার অপরাধীর অনুমতি ছারাই উক্ত শাস্তির পরিবর্তে অন্য যেকোন স্বল্পদণ্ড দিতে পারে।

Related Sections:
মৃত্যুদণ্ড ও যাবজ্জীবন কারাবাস দেওয়া যেতে পারে এইরুপ প্রত্যক ক্ষেত্রে সরকার অপরাধীর অনুমতি ছারাই উক্ত শাস্তির পরিবর্তে অন্য যেকোন স্বল্পদণ্ড দিতে পারে। ফৌজদারি কার্যবিধি ধারা ৪০২।
ফৌজদারি কার্যবিধির ধারা ৪০২ এবং ৪০২ক ধারায় যে সব বিধানের কথা বলা হয়েছে, তা সংবিধানের ৫৭ অনুচ্ছেদের অধীনে রাষ্ট্রপতিও প্রয়োগ করতে পারবে। ধারা ৪০২ক

ধারা ৫৫ যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হ্রাসকরণ (commutation of sentence of life for imprisonment):
যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া যেতে পারে এইরুপ প্রত্যক ক্ষেত্রে সরকার অপরাধীর অনুমতি ছারাই যাবজ্জীবন কারাদণ্ডকে ২০ বৎসর মেয়াদী কারাদণ্ড দিতে পারে।

ধারা ৫৫ক President prerogative:
৫৪ ও ৫৫ ধারার বর্নিত সরকারের অধিকার সুমহের কোন কিছুই রাষ্ট্রপতির ক্ষমা, দণ্ডহ্রাস ও দণ্ডবিলম্বনের অধিকার খর্ব করবে না।

ধারা ৫৭ শাস্তির মেয়াদ গনণাঃ
শাস্তির মেয়াদ গণনা করার ক্ষেত্রে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডকে ৩০ বৎসর মেয়েদী সশ্রম কারাদণ্ড ধরে নেওয়া হবে।
ধারা ৬০ সশ্রম ও বিনাশ্রম কারাদণ্ডঃ
যখন কোন অপরাধীকে কারাসণ্ড দেওয়া হয়, সেই কারাদণ্ড হতে পারে-
১- সম্পুর্ণরূপে সশ্রম;
২- সম্পুর্ণরুপে বিনাশ্রম; কিংবা
৩- আংশিক সশ্রম ও আংশিক বিনাশ্রম।

ধারা ৬৩ অর্থদণ্ডের পরিমাণঃ
যে অপরাধের ক্ষেত্রে অর্থদণ্ডের পরিমাণ উল্লেখ্য থাকবেনা, সেক্ষেত্রে অর্থদণ্ডের পরিমাণের কো সীমা থাকবেনা, তবে এটা অতিরিক্ত হবে না। যিনি বিচার করিতেছেন তাহার ক্ষমতার বাহিরে তিনি অর্থদণ্ড দিতে পারবেন না।
ধারা ৬৪ অর্থ অনাদায়ে কারাদণ্ডঃ
অর্থদণ্ডের আদেশ পেয়েও যদি কোন অপরাধী তা দিতে ব্যার্থ হয় তবে তাকে অর্থদণ্ডের পরিবর্তে কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে।
অর্থ অনাদায়ের কারণে  আদালত অপরাধীকে যে মেয়েদের কারাদণ্ডের আদেশ প্রদান করেন সেই মেয়াদের এক-চতুর্থাংশ পর্যন্ত কারাদণ্ডের আদেশ দিতে পারে। ধারা ৬৫
অর্থদণ্ড অনাদয়ে যে কারাদণ্ড দেওয়া হয় তা মূল অপরাধের মূল কারাদণ্ডের সহিত একই সময় চলতে পারে না। ৬৪ ধারা অনুসারে অর্থদণ্ড অনাদায়ের কারাদণ্ড মূল কারাদণ্ডের সাথে অতিরিক্ত হিসেবে গণ্য হয়।  [PLD 1959 Kar. 56]

ধারা ৬৬ অর্থদণ্ড অনাদায়ে কারাদণ্ডের বর্ণনাঃ
যে ক্ষেত্রে জরিমানা অনাদায়ের জন্য যে কারাদণ্ড দেওয়া হয় সেই ক্ষেত্রে কারাদণ্ড সশ্রম ও বিনাশ্রমও হইতে পারে। তবে যে অপরাধের জন্য দণ্ড প্রদান করা হয় সেই অপরাধের যদি কারাদণ্ডের প্রকৃতির বিধান থাকে তবে তা আদালত অবমাননা করতে পারে না।

ধারা ৬৭ কেবল অর্থদণ্ডে দণ্ডযোগ্য অপরাধের ক্ষেত্রে অর্থদণ্ড অনাদায়ে কারাদণ্ডঃ 
যে অপরাধ কেবল অর্থদণ্ডে দণ্ডনীয়, সেই অপরাধে অর্থদণ্ড দিতে হবে। তবে অর্থদণ্ড আদায় না হলে আদালত কারাদণ্ডের আদেশ দিতে পারেন নিম্নবর্নিত নিয়ম অনুযায়ীঃ
১- এ ক্ষেত্রে জরিমানা অনাদায়ে যে কারাদণ্ড দেওয়া হবে তাহা বিনাশ্রম হবে।
২- ৫০ টাকা পর্যন্ত জরিমানার ক্ষেত্রে অনূর্ধ্ব দুই মাসের কারাদণ্ড দেওয়া যেতে পারে।
৩- ১০০ টাকা পর্যন্ত জরিমানার ক্ষেত্রে অনুর্ধ্ব চার মাসের কারাদণ্ড দেওয়া যেতে পারে।
৪- অন্য ক্ষেত্রে অনুর্ধ্ব ছয় মাস।
যেক্ষেত্রে কোন অপরাধ শুধুমাত্র অর্থদণ্ড দ্বারা শাস্তিযোগ্য হয় তখন উহা পরিশোধ করা না হইলে কোন ক্রোকী পরোয়ানা ভা distress warrant জারি করে তা আদায় করা যায়।
১৯৬০ সালের মিউনিসিপ্যাল এ্যাডমিনিস্ট্রেশন অর্ডিন্যান্স এর ৭৭ এবং ৮৩ ধারার অধীনে জনৈক অভিযুক্ত ব্যাক্তির ৫০ টাকা জরিমানা হয় এবং জরিমানা অনাদায়্যে এক মাসের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়। পরবর্তীতে আদালত সিধান্ত দেয় যে, জরিমানা অনাদায়ে এক মাসের সশ্রম কারাদণ্ড আদেশটি আইনের দৃষ্টিতে মন্দ। এইরূপ ক্ষেত্রে বিনাশ্রম কারাবাসের আদেশই উপযুক্ত ব্যবস্থ্যা। 

Related Section:
ধারা ৩৮৬ ফৌজদারি কার্যবিধিঃ
এ ধারার বিধান প্রযোজ্য হয় যখন অপরাধীকে দণ্ডবিধির ৬৩ ধারা থেকে ৭০ ধারার অধীনে জরিমানা করা হয়। এই ক্ষেত্রে আদালত অপরাধীর স্থাবব ও অস্থাবর সম্পত্তি ক্রোক এবং ক্রোকক্রীত মাল বিক্রি করে জরিমানা আদায় করতে পারে। তবে যদি দণ্ডাদেশে নির্দেশ থাকে যে অপরাধী জরিমানা অনাদায়ে কারাবাস ভোগ করবে, তাহলে আদালত কোন বিশেষ ক্ষেত্রে ছাড়া ক্রোকী ওয়ারেন্ট জারি করবেন না।
তবে যদি আদালত ঐরূপ কোনো ওয়ারেন্ট জারি কবে তবে ১৯০৮ সালের দেওয়ানী কার্যবিধির অর্থ অনুসারে উক্ত ওয়ারেন্টকে ডিক্রী ও কালেক্টরকে ডিক্রীদার বলিয়া গন্য হবে।

ধারা ৭০ জরিমানা আদায়ের সময়সীমাঃ
অর্থদণ্ড অনাদায়ের বিধান এই ধারায় বিধৃত উহা নিম্নরূপঃ
১- অপরিশোধিত জরিমানা ছয় বছরের মধ্যে যেকোন সময় আদায় করা যায়।
২- অপরাধী ছয় বছরের বেশী সময়ের জন্য কারাদণ্ডে দণ্ডিত হলে মেয়াদ শেষ হবার পুর্বে যে কোন সময় জরিমানা আদায় করা যাবে।
৩- জরিমানা না দিয়ে অপরাধীর মৃত্যুবরণ করলে, জরিমানা তার সম্পত্তি থেকে আদায় করা যাবে।
কারাদণ্ডের আদেশ প্রদানের ছয় বছরের মধ্যে জরিমানা আদায় না করলে তা আর আদায়যোগ্য থাকে না। আর যে ক্ষেত্রে অপরাধী ছয় বছর চেয়ে বেশী সময়ের জন্য কারাদণ্ডে দণ্ডিত হয়, সে ক্ষেত্রে উক্ত কারাদণ্ডের মেয়াদ শেষ হবার পরে জরিমানা আদায় করা যাবে না। [AIR 1941 Bom. 158]

ধারা ৭১ একাধিক অপরাধের সমন্বয়ে গঠিত একটি অপরাধের শাস্তির সীমাঃ
যখন কয়েকটি অপরাধমূলক কাজকে একটি অপরাধ বলা যায় অথবা কয়েকটি অপরাধমূলক কাজ যখন একটি অপরাধের অংশ বিশেষ, এসব ক্ষেত্রে শুধুমাত্র একটি অপরাধের জন্য শাস্তি প্রদান করা যাবে।  তবে যে কাজসমূহের দ্বারা ভিন্ন ভিন্ন অপরাধ হয় সেই ক্ষেত্রে প্রত্যেকটি অপরাধের জন্য শাস্তি পাবে। আবার কোন একটি কাজ যখন ভিন্ন অপরাধরূপে গণ্য হয় তখন আদালত যে অপরাধের শাস্তি সবচেয়ে বেশী কেবলমাত্র সেই অপরাধের জন্য শাতি দিতে পারেন। এর থেকে বেশী পারেন না।
উদাহরণঃ জুয়েল হিমেলকে ইচ্ছাকৃতভাবে ৫০বার লাঠি দ্বারা আঘাত করে। এক্ষেত্রে জুয়েল প্রত্যেকবার ৩২১ ধারার অধীনে voluntary causing hurt এর  শাস্তি পাইতে পারে। আবার সে সমগ্র আঘাতের জন্য ৩২২ ধারার অধীনে voluntary causing grievous hurt এর শাস্তি পাইতে পারে। এক্ষেত্রে আদালত জুয়েল কে ৩২৩ ধারার অধীনে ৫০ বার আঘাতের জন্য সর্বচ্চো ৫০ বছর শাস্তি দিতে পারেন। কিন্তু আদালত দণ্ডবিধির ৭০ ধারা অনুযায়ী সমগ্র আঘাতের জন্য জুয়েলকে ৩২৫ ধারার অধীনে সর্বচ্চো সাত বছরের শাস্তি দিতে পারে।
আবার যদি এমন হয়, জুয়েল হিমেল আঘাত করার সময় জীবন বাধা দেওয়ার চেষ্টা করায় সে জীবনকেও আঘাত করে। এক্ষত্রে তাকে দুইটি ভিন্ন অপরাধের জন্য শাস্তি পাবে। এক্ষেত্রে দুইটী অপরাধকে একত্র করে শাস্তি দেওয়া যাবে না।

Related Section:
ধারা ৩৫ ফৌজদারি কার্যবিধিঃ
এই ধারায় একাধিক অপরাধে দণ্ডিত ব্যাক্তির শাস্তি কি রকম হবে এই তা বলা হয়েছে। এই ধারা দণ্ডবিধির ৭১ ধারার অধীন। যে কাজসমূহের দ্বারা ভিন্ন ভিন্ন অপরাধ হয় সেই ক্ষেত্রে প্রত্যেকটি অপরাধের জন্য অভিযুক্ত ব্যাক্তি শাস্তি পাবে। এবং মোট শাস্তির পরিমাণ যদি আদালতের এখতিয়ারের অধিক হয় তাহলে অপরাধীকে কোন উচ্চতর আদালতে পাঠানোর প্রয়োজন নেই। তবে শর্ত থাকে যে, কোন অবস্থাতে এইরূপ ব্যাক্তিকে ১৪ বছরের অধিক কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা যাবে না, এবং কোন ম্যাজিস্ট্রেট যদি এমন মামলার বিচার করেন, তাহলে মোট শাস্তির পরিমাণ তার সাধারন এখতিয়ারের দিগুণ হবে না। 
ধারা ২৩৫ ফৌজদারি কার্যবিধিঃ
এই ধারায় একজন ব্যাক্তির বিরুদ্ধে একাধিক অপরাধের চার্জ সংযুক্তিকরণের বিধান আছে। যখন কয়েকটি অপরাধমূলক কাজকে একটি অপরাধ বলা যায় অথবা কয়েকটি অপরাধমূলক কাজ যখন একটি অপরাধের অংশ বিশেষ, এরূপ কার্যবলি যদি এমন একটি অপরাধ সৃষ্টি করে যা বর্তমানে বলবত কোন আইনের (Penal Code or any substantive criminal law) দুই বা ততোধিক পৃথক সংজ্ঞার অন্তর্ভুক্ত হয় তাহলে উক্ত অপরাধের অভিযুক্ত ব্যাক্তির বিরুদ্ধে প্রত্যেকটি অপরাধের জন্য অভিযোগ প্রস্তুত করা যেতে পারে এবং একই মামলায় তাহার বিচার করা যাতে পারে। (এই ধারা যেসব মামলায় প্রযোজ্য যখন বিভিন্ন অপরাধ সংগঠিত হয় একই কাজের অংশ হিসেবে যাকে same transaction বলা হয়। Same Transaction এর সংজ্ঞা সাক্ষ্য আইনের ৬নং ধারায় বলা আছে। )
১২ মাসের মধ্যে সংগঠিত এক প্রকারের ৩টি অপরাধের বিচার একটি মামলায় করা যেতে পারে- ধারা ২৩৪।
এই ধারায় ৩টি শর্ত আছে;
১- অপরাধগুলি একই রকমের হতে হবে।
২- এগুলি সংগঠিত হয়েছে ১২ মাসের মধ্যে। এবং
৩- তিনটির বেশী অপরাধ এর চার্জ একটি মামলায় সংযুক্ত করা যাবে না।
যে ক্ষেত্রে একটি অপরাধ আইনের বিভিন্ন বিধানের অধীনে শাস্তিযোগ্য হয় সেই ক্ষেত্রে আইনসংগতভাবে উহার একটিমাত্র শাস্তি আরোপ করা যায়। [AIR 1950 Lah. 97]
ফৌজদারি কার্যবিধির ২৩৪, ২৩৫, ২৩৬ এবং ২৩৯ ধারার আওতায় না পড়লে প্রত্যেকটি পৃথক চার্জের পৃথকভাবে বিচার হবে। ধারা ২৩৩ ফৌজদারি কার্যবিধি।

ধারা ৭২ অপরাধটি দণ্ডবিধির কোন ধারার অধীনে বিষয়ে সন্দেহ সৃষ্টি হলেঃ
অপরাধ দণ্ডবিধির কোন ধারার অধীনে পড়বে এই বিষয়ে আদালত সন্দিহান হলে যে ধারায় কম শাস্তি সেই ধারার আলোকে শাস্তি প্রদান করতে হবে। এই ধারাটি ৭১ ধারার ব্যাতিক্রম। অপরাধীর অপরাধ সাব্যস্ত হবার পর, শুধুমাত্র আইন নির্ণয়ের অজুহাতে ছাড়া না পাই, সেই জন্য এই ধারার বিধান গ্রহণ করা হয়েছে।  গঠিত চার্জে অন্তর্ভুক্ত হয় নাই এমন অপরাধের জন্য কোর্ট আসামীকে শাস্তি দিতে পারেন ফৌজদারি কার্যবিধির ২৩৭ ও ২৩৮ ধারা অনুসারে।
In Kalu and another vs. The State, “The accused appellants were charged under section 302/34 of the Penal Code but Additional Sessions Judge on consideration of evidence on records found them guilty under section 201 of Penal Code. High Court Division upheld the conviction by referring to section 236 and 237 of the CrPC. Appellate Division found no illegality in the observation and finding of the High Court Division.” [1 BCR 129 (SC)]

Related Sections:
ফৌজদারি কার্যবিধি ধারা ২৩৬
তথ্য ও প্রমাণের ভিত্তিতে এক বা একাধিক অপরাধের মাঝে কোনটি সংগঠিত হয়েছে যদি সে বিষয়ে সন্দেহ থাকে তাহলে সকল অপরাধের জন্য অথবা বিকল্প ভাবে যেকোন একটির অপরাধের জন্য চার্জ করা যেতে পারে। এবং সকল চার্জের বিচার এক সময়েই করা যেতে পারে।
কোন অপরাধ বাস্তবিক ভাবে সংঘটিত হয়েছে সে সম্বন্ধে বিচারকের সন্দেহ থাকলে কিভাবে চার্জ গঠন করতে হবে এ ধারায় সে বিধান উল্লেখ্য করা হয়েছে। এ ধারা প্রযোজ্য, সেক্ষেত্রে যেখানে ঘটনার তথ্যাদি সন্দেহজনক নয় কিন্তু আইনের প্রয়োগ সন্দেহজনক।

ধারা- ৭৩ নির্জন কারাবাস
এই ধারায় নির্জন কারাবাসের দণ্ডের বিধান আলোচনা করা হয়েছে। যে অপরাধের জন্য আদালত অপরাধীকে সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়ার এখতিয়ার রাখে সে আদালত নির্জন কারাবাস এর আদেশ দিতে পারেন।
যে মেয়াদের জন্য সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হচ্ছে তার সম্পূর্ণ সময় এর জন্য  নির্জন কারাবাসের আদেশ দেওয়া যাবে না। সশ্রম কারাদণ্ডের পুর্ণ মেয়াদের একটি অংশ পরিমাণ সময় নির্জন কারাবস দেওয়া যাবে।
নির্জন কারাবস সর্বোচ্চ তিন মাসের অধিক হবে না।
সশ্রম কারাদণ্ডের মেয়াদ ৬ মাস বা তার কম হলে নির্জন কারাবাস এক মাসের বেশী হবে না।
সশ্রম কারাদণ্ডের মেয়াদ ৬ মাসের বেশী কিন্তু ১ বছরের কম হলে  নির্জন কারাবাসের ২ মাসের বেশী হতে পারবে না।
সশ্রম কারাদণ্ডের মেয়াদ ১ বছরের বেশী হলে নির্জন কারাবাস তিন মাসের বেশী হবে না।
যে অপরাধের দণ্ড সশ্রম কারাবাস নয়, সেই অপরাধের ক্ষেত্রে নির্জন কারাবাসের আদেশ দেওয়া অবৈধ।
শুধু মাত্র দণ্ডবিধির অধীনে অপরাধের ক্ষেত্রে নির্জন কারাবাসের শাস্তি দেওয়া যায়। বিশেষ আইন অথবা স্থানীয় আইনের অধীনে নির্জন কারাবাসের শাশ্তি দেওয়া যায় না। [AIR 1924 Lahore 667]

ধারা- ৭৪ নির্জন কারাবাসের সীমাঃ
নির্জন কারাবাসের দণ্ডাদেশ কিভাবে কার্যকরী করা হবে, এই ধারায় তার আলোচনা করা হয়েছে।
একসাথে নির্জন কারাবাস ১৪ দিনের বেশি হবে না।
কারাদণ্ডের মেয়াদ তিন মাসের অধিক হলে নির্জন কারাবাস কোন মাসে সাত দিনের বেশি হবে না।
নির্জন কারাবাসের পুর্বে ও পরে বিরতি থাকবে।